কিডনি সুস্থ রাখার উপায়:

কিছু ঔষধ বেশি খাবেন না

ডাক্তার আপনাকে অ্যাসপিরিন, ইবুপ্রোফেন, ন্যাপরোক্সেন, সেলিব্রেক্স এই জাতীয় ঔষধ গ্রহন করতে নিষেধ করবেন। এই ঔষধগুলোকে ডাক্তাররা “এনএসএআইডিএস” (ননস্টেরোয়িডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ) নামে ডেকে থাকেন। এনএসএআইডি হচ্ছে এক ধরণের প্রদাহরোধী ঔষধ।এই ঔষধ যদি আপনি একসঙ্গে অনেকগুলো গ্রহন করেন বা মাঝে মাঝে গ্রহন করেন তাহলে তা আপনার কিডনির ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া আলসার বা জিইআরডি’র জন্য দীর্ঘদিন ধরে (পিপিআইএস) গ্রহন করলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি’র রোগ হতে পারে। শুধুমাত্র ডাক্তারের নির্দেশে আপনি এই ঔষধগুলো গ্রহন করতে পারেন।

অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাপারে সতর্ক হোন

আপনি যদি প্রায়ই ব্যাকটেরিয়ারোধী ঔষধ গ্রহন করেন তাহলে তা আপনার কিডনির ক্ষতি করতে পারে। আপনি পুরোপুরি সুস্থ হলেও এমনটা ঘটতে পারে, যদিও আপনার কিডনি যথাযথভাবে কাজ না করে তাহলে বিষয়টি আরো গুরুতরো হবে। কিছু অ্যান্টিবায়োটিক যেমন: পেনিসিলিন, সালফোনামাইড, এবং সেফালোসপোরিনস বেশি করে সমস্যার সৃষ্টি করে।

ভেষজ ঔষধগুলো বাদ দিন

ভেষজ ঔষধ প্রস্তুতকারীরা তাদের জিনিষপত্র ব্যবহারের জন্য নিরাপদ কি না তা নিশ্চিত করে না, এই ভেষজ ঔষধগুলো আপনার কিডনি নষ্ট করতে পারে। আপনার যদি কিডনির রোগ থেকে থাকে তাহলে ওগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিকর কারণ ওগুলো অবস্থার আরো অবনতি করতে পারে বা ঔষধের কাজকে প্রভাবিত করতে পারে। যেকোন ভেষজ ঔষধ গ্রহনের পূর্বে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।

স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করুন

আপনি যা খান বা পান করেন তার সবকিছুই আপনার কিডনি প্রক্রিয়াজাত করে। যা আপনার জন্য ক্ষতিকর যেমন: প্রচুর পরিমানে চর্বি, লবন, এবং চিনিও কিডনি প্রক্রিয়াজাত করে। সময়ের সাথে সাথে খারাপ খাবারগুলো কিডনির জন্য কঠিন রোগ যেমন: উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, ডায়বেটিস, এবং অন্যান্য রোগের সৃষ্টি করতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন: প্রচুর পরিমানে শাক সবজি, ফল, এবং আস্ত শষ্যদানা গ্রহন করুন।

লবনের দিকে খেয়াল রাখুন

এই খনিজটি মানুষকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এটা কারোর প্রস্রাবে আমিষের পরিমান বাড়াতে পারে যা আপনার কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বা আপনার যদি ইতিমধ্যে কিডনির রোগ হয়ে থাকে তাহলে তা আরো খারাপ অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত লবন আপনার রক্তচাপ বাড়াতে পারে যা কিডনি রোগ ও কিডনির পাথর হওয়ার একটি সাধারন কারণ। কিডনির পাথর একটি অত্যন্ত যন্ত্রনাদায়ক রোগ।

যথেষ্ট পানি পান করুন

পানি আপনার কিডনির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান যোগায় এবং প্রস্রাব আকারে আপনার শরীরের বর্য্য বের করে দেয়। আপনি যদি যথেষ্ট পরিমানে পানি পান না করেন তাহলে আপনার কিডনির ছোট ফিল্টারগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং এর ফলে কিডনি’তে পাথর ও ক্ষত হতে পারে। এমনকি হালকা পানি শুন্যতা আপনার কিডনির ক্ষতি করতে পারে। দিনে চার থেকে ছয় গ্লাস পানি যথেষ্ট কিন্তু আপনি যদি অসুস্থ বা বেশি তাপে থাকেন তাহলে বেশি পানির প্রয়োজন পড়ে।

ব্যায়াম

স্বাস্থ্যকর খাবারের মতো ব্যায়াম কিডনির অসুখ সৃষ্টিকারী ডায়বেটিস এবং হৃদযন্ত্রের অসুখ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু হঠাৎ প্রচুর ব্যায়াম করা ঠিক না। প্রস্তুতি ছাড়া অতিরিক্ত ব্যায়াম আপনার কিডনির ক্ষতি করতে পারে। নিজের মতো করে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৩০ থেকে ৬০ মিনিট ব্যায়াম করুন। যদি আপনি এর আগে ব্যায়াম না করে থাকেন তাহলে আস্তে আস্তে শুরু করুন। স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নিন।

কিডনি পরিক্ষা করুন

আপনার নিকট আত্মীয়দের যদি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস, বা কিডনি ফেইলিউরের পারিবারিক ইতিহাস থাকে তাহলে আপনার কিডনি রোগের কতোটুকু ঝুঁকি আছে তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে, আপনার ডাক্তার আপনাকে নির্দিষ্ট কিডনি পরিক্ষার নির্দেশ দিবেন। যতো তাড়াতাড়ি কিডনির রোগ ধরা পড়বে ততো তাড়াতাড়ি এ রোগ চিকিৎসা করা এবং নিরাময় করা সম্ভব হবে।

কিডনি ভালো রাখতে হলে রসুন, আদা, ধনে পাতা, গাজরের সরবত, শঁশার শরবত, ফুল কপি, বাঁধা কপি ও লেবু খেতে হবে। কিডনি ভালো রাখার জন্য গাজর ও শঁসার সরবত খুব উপকারি। আপেল, আপেল সাইডার ভিনেগার, লেবু, হলুদ বেল পিপার, ব্লুবেরি, এল্ডারবেরি, রাস্পবেরি বেশি করে খেতে হবে। দিনে পানি বেশি খাবেন। এছাড়া ওমেগা থ্রি, ভিটামিন বি ৬, যিংক যুক্ত খাবার খাবেন।

গ্রিন টি কিডনি’র জন্য উপকারি এছাড়া সেলারির বীজ কিডনির জন্য ভালো।

আপনার ডাক্তার আপনাকে এমন একটি বিশেষ খাবার দিবেন যে খাবারে সোডিয়াম, আমিষ, পটাসিয়াম, এবং ফসফেট কম রয়েছে। এই খাবার আপনাকে সাহায্য করবে কারণ আপনার কিডনি যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আপনার রক্ত থেকে এই পুষ্টি উপাদানগুলো বের করে দেওয়া কিডনির জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ খাবার মানে হচ্ছে আপনার কিডনিকে বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। আপনার খাবারে কতোটুকু পানি থাকবে এবং আপনি কতোটুকু পানি পান করবেন তাও আপনার ডাক্তার আপনাকে নির্ধারণ করে দিবেন।
আপনার ডাক্তার আপনাকে ভিটামিন এবং খনিজ, যেমন: ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি নির্দিষ্ট পরিমানে গ্রহনের পরামর্শ দিবেন।
কিডনি ভালো রাখার জন্য  লবন, চিনিসহ রেড মিট খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এর সাথে অ্যালকোহল, চা, কফি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। বেশিক্ষণ বসে থাকবেন না ও ধুমপান করবেন না।