দৈহিক শক্তি বাড়াতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পন্ন ওষুধি কৌশল এবং মনোবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা এখন প্রায় সেকেলে হয়ে পড়েছে। আজকাল এই শক্তি বাড়াতে প্রাকৃতিকভাবেই দৈহিক শক্তি বর্ধক খাদ্যই অনেক বেশি কার্যকরী হিসেবে বিবেচিত হয়।

ঘরে-বাইরে যারা কঠোর পরিশ্রম করেন তাদের ঠিকমত বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজন। শুধু বিশ্রাম নিলেই হবে না খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। কারণ আপনি কঠোর পরিশ্রম করছেন কিন্তু শরীরের যত্ন নিচ্ছেন না। তাহলে কিন্তু আপনি কাজ করার সক্ষমতা হারাবেন। অবশ্যই শরীরের যত্ন নিতে হবে। আর খেতে হবে এমন খাবার, যা খেলে ফ্যাট বাড়বে না, কিন্তু শক্তি বর্ধন করবে।

সারাদিন কাজের শেষে ক্লান্ত লাগা খুবই স্বাভাবিক। তবে এমনিতেই সারাক্ষণ দুর্বল লাগে। আবার কোনও কাজে শক্তি না থাকে তাহলে কিন্তু সমস্যা। মনে রাখবেন আপনার শরীরে শক্তি বাড়াতে খাবার মূখ্য ভূমিকা পালন করে। খাবার খাওয়া ঠিক থাকলে শরীরের শক্তি বাড়বে।

গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার মেনুতে নিয়মিত দুধ, ডিম এবং মধু রাখলে এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করলে দৈহিক দুর্বলতায় ভুগবেন না। এছাড়া শক্তি বাড়াতে আরও যা খাওয়া দরকার :

রসুন: দৈহিক সমস্যা থাকলে এখনই নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। স্মরণাতীতকাল থেকেই নারী পুরুষ উভয়েরই দৈহিক শক্তি বাড়াতে রসুনের পুষ্টিগুণের কার্যকারিতা সর্বজনস্বীকৃত। রসুনে রয়েছে এলিসিন নামের উপাদান যা দৈহিক ইন্দ্রিয়গুলোতে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়।

পালং শাক: পালং শাক শক্তির ভালো উৎস। পালং শাককে থাকা আয়রন, পটাশিয়াম শরীরে শক্তির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

ডিম: দৈহিক দুর্বলতা দূর করতে এক অসাধারণ খাবার ডিম। প্রতিদিন সকালে, না পারেন সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ১টি করে ডিম সিদ্ধ করে খান। এতে আপনার দুর্বলতার সমাধান হবে।
শরীরের শক্তি বাড়াতে ডিম খেতে পারেন। ডিম প্রোটিণ সমৃদ্ধ খাবার। যা আপনার শরীরে শক্তি বাড়াতে সাহায্যে করে।

চকলেট: চকলেটে রয়েছে ফেনিলেথিলামিন (পিইএ) ও সেরোটোনিন। এ দুটি পদার্থ আমাদের মস্তিষ্কেও রয়েছে। এগুলো দেহে শক্তির মাত্রা বাড়াতে সহায়ক। পিইএ’র সঙ্গে অ্যানান্ডামাইড মিলে অরগাজমে পৌঁছাতে সহায়তা করে।

ভিটামিন সি জাতীয় ফল: দৈহিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে প্রতিদিন খাবার তালিকায় রঙিন ফলমূল রাখুন। আঙ্গুর, কমলা লেবু, তরমুজ, পিচ ইত্যাদি ফল দৈহিক ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারী।

দুধ: যেসব খাবারে বেশি পরিমাণ প্রাণিজ-ফ্যাট আছে এমন প্রাকৃতিক খাদ্য দৈহিক শক্তির উন্নতি ঘটায়। যেমন, খাঁটি দুধ, দুধের সর, মাখন ইত্যাদি। বেশিরভাগ মানুষই ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে চায়। কিন্তু আপনি যদি দৈহিক শক্তির হরমোন তৈরি হওয়ার পরিমাণ বাড়াতে চান তাহলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট জাতীয় খাবারের দরকার। তবে সবগুলোকে হতে হবে প্রাকৃতিক এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট।

মধু: দৈহিক দুর্বলতার সমাধানের মধুর গুণের কথা সবারই কম-বেশি জানা। তাই দৈহিক শক্তি বাড়াতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩/৪ দিন ১ গ্লাস গরম পানিতে ১ চামচ খাঁটি মধু মিশিয়ে পান করুন।

মাংস: গরুর মাংসে প্রচুর জিঙ্ক থাকে। কম ফ্যাটযুক্ত মাংস খান। যেমন কাঁধের মাংসে, রানের মাংসে কম ফ্যাট থাকে এবং জিঙ্ক বেশি থাকে। এইসব জায়গার মাংসে প্রতি ১০০ গ্রামে ১০ মিলিগ্রাম জিঙ্ক থাকে।

বাদাম: বাদাম শক্তির ভালো উৎস। আখরোট, কাজু বা পেস্তা বাদাম খেতে পারেন।

ডাল: শরীরের দুর্বলতা কাটাতে ডাল খেতে পারেন। ডালে থাকা প্রোটিন শরীরের শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

কলা: কলার রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি ও পটাশিয়াম। ভিটামিন বি ও পটাশিয়াম দৈহিক শক্তি বাড়ায়। আর কলায় রয়েছে ব্রোমেলিয়ানও। যা শরীরের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতেও সহায়ক। আর সর্বোপরি কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ শর্করা যা আপনার দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে ক্লান্তি আসবে না।